সিরাতে মুস্তাকীম (প্রভুর দিকে যাওয়ার সরল পথ)
- যাদের বাহ্যিক আচরণ ঠিক, কিন্তু অন্তর কালো, ধর্মে যারা ফেতনা (বিশৃঙ্খলা) সৃষ্টি করে, তারা শয়তানের খলিফা।
হাদিসে আছে: “অশিক্ষিত আলেমকে ভয় করো এবং তাদের থেকে দূরে থাকো, যাদের জিহ্বা আলেমের মতো, কিন্তু হৃদয় অশিক্ষিত বা কালো।”
- যাদের অন্তর পবিত্র কিন্তু বাহ্যিক আচরণ খারাপ, তাদের মাজযুব (আল্লাহর প্রেমে বুদ্ধিহারা), মাজুর (নিঃসহায়), সুকার (আধ্যাত্মিক মাদকতায় মত্ত) এবং মুনফারিদ (একাকী) বলা হয়।
ইশক (প্রেম) এর কারণে যদি জ্ঞান লোপ পায়, তাহলে হাশরের দিন হিসাব কীভাবে হবে? (তারইয়াক-এ-কাল্ব)
এই ধরনের লোকেরা ধর্মের জন্য চিন্তার কারণ, তবে আল্লাহর নৈকট্যে থাকেন। কিন্তু তারা বেশি মর্যাদা লাভ করতে পারেননি। তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে কোনো মর্যাদায় স্বীকৃত বা নিযুক্ত নন। যারা এদের নকল করে, তারা জিন্দিক (মিথ্যাবাদী)।
এই ধরনের লোকেরা (যারা আল্লাহর পক্ষ থেকে নিযুক্ত নন) প্রেসিডেন্ট আইয়ুব, বেনজির এবং নওয়াজ শরীফের মতো রাষ্ট্রপ্রধানদের তাদের শাসনামলে ডাণ্ডা মারতেন এবং গালি দিতেন। তোমরা কোনো ক্ষমতাবানকে ডাণ্ডা মেরে দেখাও, অর্থাৎ এটা শুধু তাদেরই ব্যক্তিত্বের মধ্যে সীমাবদ্ধ, অন্যদের জন্য নয়।
- যাদের বাহ্যিক আচরণ ঠিক এবং অন্তরও ঠিক, তারা শুধু বাহ্যিক ইবাদতই নয়, কাল্বের(হৃদয়ের) ইবাদতও করেন। তাদেরকে আলেমে রাব্বানী (আল্লাহর জ্ঞানে পূর্ণ আলেম) বলা হয়। এরাই রাসূলের প্রতিনিধি এবং ধর্মের উত্তরাধিকারী হয়ে থাকে। যখন কারো বাহ্যিক ও অন্তর এক হয়ে যায়, তখন তাদেরকে আল্লাহর প্রতিনিধি বলা হয়। যদি তারা স্বপ্নে বা আধ্যাত্মিকভাবে হজ্জ করেন, তাহলে তারা বাহ্যিকভাবেও তার পুণ্য লাভ করেন, বরং বাহ্যিক হজ্জ থেকে অনেক বেশি হয় সেই পূণ্য। রুহের নামাজ প্রকাশ্য নামাজের সমান, বরং তার চেয়ে অনেক গুণ বেশি। এই লোকেরা যদি প্রকাশ্যে নামাজ পড়ে, তাহলে তাদের আধ্যাত্মিক জগতে নামাজ মেরাজ হয়ে যায়। এই সব লোকেরা যাদের দেহ পৃথিবীতে, কিন্তু রুহ উর্ধ্বজগতে, ফাকর (আধ্যাত্মিক দরিদ্র) এর বিভাগে এদের মোআরেফও (যাদের রুহ অলি হয়ে থাকে) বলা হয়। প্রেমিকের জন্য রবের দর্শনই যথেষ্ট। কিছু লোক বলে, দিদারে ইলাহি সম্ভব নয়। অথচ এই দিদারে ইলাহি এর জ্ঞান হুজুর পাক (সাঃ) থেকেই শুরু হয়েছে। ইমাম আবু হানিফা বলেন: “আমি স্বপ্নে ৯৯ বার রবকে দেখেছি।” বায়েজিদ বোস্তামী বলেন: “আমি ৭০ বার রবের দিদার (দর্শন) লাভ করেছি।” লতিফা “আন্না” (মাথার ভিতরে যার অবস্থান) এর মাধ্যমে দিদার হয়, আর তোমরা লতিফায়ে আন্নার শিক্ষা ও যিকিরের ব্যাপারে অজ্ঞ।