লতিফা আনা
এটি মস্তিষ্কে অবস্থান করে এবং এর কোনো নির্দিষ্ট রং নেই। ‘ইয়া হু’ নামের যিকিরের মাধ্যমে এটি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে। এটি আধ্যাত্মিক শক্তি লাভের পর আল্লাহকে পর্দাহীন অবস্থায় দেখে এবং তাঁর সাথে কথা বলতে সক্ষম হয়। এটি প্রেমিকদের (আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের) মর্যাদা। এছাড়াও, আল্লাহর কিছু বিশেষ প্রিয়জনদেরকে বিশেষ আত্মিক শক্তি দেওয়া হয়, যেমন তিফল-এ-নূরী (আল্লাহর নূরের রুহ) এবং জুছসা-এ-তাওফিক-এ-ইলাহি (আল্লাহর আত্মিক শক্তি)। এই মর্যাদাপ্রাপ্তদের বুঝা সাধারণ বুদ্ধির সীমার বাইরে।
‘আনা’ লতিফার মাধ্যমে স্বপ্নে আল্লাহকে দেখা যায়, আর জুছসা-এ-তাওফিক-এ-ইলাহির মাধ্যমে মুরাকাবার (গভীর ধ্যানে) আল্লাহকে দর্শন করা সম্ভব হয়।
যারা তিফল-এ-নূরী (আল্লাহর বিশেষ প্রতিচ্ছবি, যা শুধুমাত্র সাতজন নির্বাচিত ব্যক্তিকে প্রদান করা হয়, যাদের সুলতান আল ফুকরা বলা হয়) লাভ করেছেন, তারা জাগ্রত অবস্থায় আল্লাহকে দর্শন করতে পারেন। দুনিয়া তাদের ‘আল্লাহর শক্তি’ হিসেবে চেনে। তারা ইচ্ছামতো কাউকে মাকাম মাহমুদ (প্রশংসা ও মহিমার উচ্চস্থানে) পৌঁছে দিতে পারেন—হোক তা ইবাদতের মাধ্যমে, কঠোর সাধনার মাধ্যমে, কিংবা কেবল তাদের দয়ার দৃষ্টির দ্বারা। বিশ্বাসী বা অবিশ্বাসী, জীবিত বা মৃত—এদের দৃষ্টিতে এর কোনো পার্থক্য নেই। যেমন, এক চোর আবদুল কাদির জিলানির এক নজরেই ওলি হয়ে গিয়েছিলেন। আবু বকর হাওয়ারি এবং মঙ্গা ডাকুও এ ধরনের অলিদের এক দয়ার দৃষ্টিতেই ওলি হয়ে যান। পাঁচজন মহান রাসূলকে তাদের নির্দিষ্ট লতিফার জ্ঞান সরাসরি দেওয়া হয়েছিল, ফলে আধ্যাত্মিক শক্তি ও গুণমান বৃদ্ধি পেতে থাকে। তুমি যে লতিফাকে সজাগ করবে এবং আল্লাহর যিকিরে যুক্ত করবে, সেই মহান রাসূলের ফায়েজ লাভের যোগ্য হবে এবং তার সাথে সংযুক্ত হবে। যে লতিফার ওপর আল্লাহর তাজাল্লি (নূরের প্রকাশ) পতিত হবে, সে লতিফার মাধ্যমে তোমাকে অলিত্ব দান করা হবে। সাতটি জগতের রহস্য উন্মোচন এবং সাতটি জান্নাতের বিভিন্ন স্তর লাভ করাও লতিফাসমূহের মাধ্যমেই সম্ভব।